শুধুমাত্র বিরাট কোহলি খেলছেন বলেই দিল্লি বনাম রেলওয়েজ ম্যাচে বিপুল সংখ্যায় দর্শক আসে অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে। বৃহস্পতিবার ম্যাচের প্রথম দিনে দিল্লি ফিল্ডিং করে। সুতরাং, কোহলির বিশেষ ভূমিকা ছিল না খেলায়। সারাক্ষণ বৃত্তের ভিতরে ফিল্ডিং করেন বিরাট।
ব্যাট-বল করার সুযোগ ছিল না। তবে কোহলি দর্শকদের সঙ্গে নিজের সংযোগ স্থাপনে পিছ পা হননি। তিনি নিজের আচরণেই মনোরঞ্জন করেন অনুরাগীদের। তবে দ্বিতীয় দিনে কোহলি ব্যাট করতে নামবেন বুঝেই সকাল সকাল গ্যালারি ভরান দর্শকরা।
দ্বিতীয় দিনের সকালে সনৎ সাঙ্গওয়ান ও যশ ধুল যতক্ষণ ব্যাট করছিলেন, তর সইছিল না দর্শকদের। রেলওয়েজের বোলাররা যতবার এলডিব্লিউর আবেদন জানান দুই ব্যাটারের বিরুদ্ধে, গ্যালারির দর্শকরাও তাঁদের সঙ্গে গলা মেলান। আসলে সবাই অধীর আগ্রহে ছিলেন কোহলি কখন ব্যাট করতে নামবেন।
আম্পায়ারেরও যেন তর সইছিল না। ইনিংসের ২৩.৫ ওভারে রাহুল শর্মার বল যশ ধুলের প্যাডে লাগতেই আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। বল প্যাডের এতটাই উঁচুতে লাগে যে, স্টাম্প ছাড়িয়ে উপর দিয়ে চলে যেতে পারত। এত উঁচু বলে আম্পায়াররা সচারচর এলবিডব্লিউ দেন না ব্যাটারদের। তাই যশ ধুল রীতিমতো হতবাক হয়ে যান এভাবে আউট হতে হওয়ায়।
যশ ধুল আউট হতেই গ্যালারিতে যে গর্জন ওঠে, তা শুনে বুঝে ওঠা মুশকিল দর্শকরা কাদের সমর্থন করতে এসেছে। ঘরের মাঠে দিল্লির ব্যাটার আউট হওয়ায় দর্শকদের উল্লাস দেখেই বোঝা যায়, আসলে তারা রাজ্যদলের সমর্থনে নয়, বরং শুধুমাত্র বিরাট কোহলিকে সমর্থন করতে মাঠে এসেছে।
বিরাট কোহলি মাঠে এসে নিজের পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে খাতা খোলেন। ১১তম ডেলিভারিতে আরও এক রান সংগ্রহ করেন বিরাট। ইনিংসের ২৭.৩ ওভারে রেলওয়েজের পেসার হিমাংশু সাঙ্গওয়ানের বলে জোরালো স্ট্রেট-ড্রাইভ মারেন কোহলি এবং তিরের গতিতে সেই বল বাউন্ডারি লাইনের বাইরে চলে যায়। বিরাটের বাউন্ডারের পরের গ্যালারির চিৎকারে কান পাতা দায় ছিল।
তবে দর্শকদের সেই উল্লাল মুহূর্তে শশ্মানের নিস্তব্ধতায় পরিণত হয় মুহূর্তে। কেননা ঠিক পরের বলেই বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন কোহলি। ২৭.৪ ওভারে ফের হিমাংশুর ফুল লেনথ বলে জোরালো স্ট্রেট ড্রাইভ মারার চেষ্টা করেন কোহলি। তবে এক্ষেত্রে বল পিচে পড়ার পরেই ভিতরের দিকে বাঁক নেয়। ফলে বিরাটের ব্য়াটের নাগাল এড়িয়ে ব্যাড-প্যাডের ফাঁক দিয়ে বল গিয়ে লাগে স্টাম্পে। অফ-স্টাম্পের উপরের দিকে বল লাগার পরে ছিটকে যায় স্টাম্প। হাওয়ায় কয়েকটা পাক খাওয়ারক পরে স্টাম্প পৌঁছে যায় যায় ক্রিজ থেকে অনেকটা দূরে।
এভাবে কোনও ব্যাটারকে আউট করা যে কোনও পেস বোলারের স্বপ্ন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বিরাট কোহলির মতো সুপারস্টারের স্টাম্প উড়িয়ে হিমাংশু নিশ্চিতভাবেই দিনটা স্মরণীয় করে রাখেন বলা যায়। কোহলি ১টি বাউন্ডারির সাহায্য়ে ১৫ বলে ৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন। কোহলি আউট হতেই বিশেষ সময় নষ্ট না করে দর্শকরা গ্যালারি ছাড়তে শুরু করেন। মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে যায় সারি সারি চেয়ার।