টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এখন বিশ্বজুড়ে ভীষণ জনপ্রিয়। টি-টোয়েন্টি জন্মলগ্ন থেকেই এই খেলা ভীষণ রকম ভাবে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। এই জনপ্রিয়তার কারনে প্রতিটি দেশেই এখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে ভীষণ রকম ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং টি ২০ এর প্রসারের জন্য ICC ও ভীষণ ভাবে সক্রিয় ।
কিন্তু যেহেতু জনপ্রিয়তা খুব বেশী তাই এই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফিক্সিংয়ের মতো গুরুতর অভিযোগ নান ভাবে বার বার উঠেছে। এই মামলায় অনেক সময় অনেককে জেলে ও যেতে হয়েছে।
আজকের যে ঘটনার কথা বলছি সেটা হল আর্জেন্টিনা সফরে চিলি দল-এর খেলার কথা। যেখানে এই দুই দলের ভেতর টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা হচ্ছে। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় ১৩ অক্টোবর। যেখানে এমনই কিছু অবিশ্বাস্য রেকর্ড তৈরি হয়েছে। যিনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে আবার নতুন করে স্ক্যানারের এর তলায় এনে ফেলেছে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট: এক ইনিংসে ৬৪টি নো বল
আর্জেন্টিনা মহিলা ক্রিকেট দল এবং চিলি দলের মধ্যে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি 13 অক্টোবর খেলা হয়েছিল। এই ম্যাচে করা রেকর্ডগুলো জানার পর আপনার হয়ত অবিশ্বাস্য বলে মনে হবে। কারণ ক্রিকেট মাঠে একটি নো বোলাররা চিন্তায় ফেলে দেয় দলকে , কারণ নো বল হলে তার পরেই ফ্রি- হিট থাকে । কিন্তু এক ইনিংসে ৬৪ নো বল দেখলে কেমন লাগবে, সেটা আপনি নিশ্চি আন্দাজ করতে পারছেন।
আপনি হয়তো ভাবছেন এটা কিভাবে ঘটতে পারে। তাই বলে রাখি এই ঘটনা সত্য। চিলি দল খুবই লজ্জাজনক পারফর্ম করেছে, আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বোলিং করতে গিয়ে চিলির বোলাররা 64টি নো বল করেন। যা ক্রিকেট বিশ্বে একটি ইতিহাস।
এক ওভারেই ৫২ রান দিয়েছে
বিশ্বে ক্রিকেট খেলার প্রসার খুব দ্রুত হারে বেরে চলেছে, খবর অনুযায়ী হয়ত পরের অলেম্পিকে ক্রিকেট থাকতে পারে। এবং এখনকার দিনের ক্রিকেটে ওভারের প্রতিটি বল ই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ।
তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বোলারদের উপর কিছুটা বাড়তি চাপ থাকে, কেননা টি ২০ তে অভার প্রতি রান একটু বেশীই ওঠে। কিন্তু এতটা নয় যে আমরা এক ওভারে ৫২ রান দিয়ে ফেলি। কিন্তু এটা দেখা গেছে। এই ম্যাচে চিলির বোলার ফ্লোরেনিয়া মার্টিনেজ প্রচুর রান দিয়েছিলেন। এক ওভারে ৫২ রান দেন তিনি। মজার ব্যাপার হলো এক ওভারে ১৭ নো বল দিয়েছিলনে তিনি।
427 স্কোরে কোন ছক্কা না মেরে
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সিরিজ খেলা হচ্ছে এবং সেই ইনিংসে একটি ছক্কা না মারলে 120 বলে 427 রান হলে কেমন লাগবে। এই জিনিসটি যে কাউকে চমকে দিতে পারে, আমরা আপনাকে বলে দিই যে আর্জেন্টিনা এবং চিলির মধ্যে খেলা (আর্জেন্টিনা মহিলা বনাম চিলি মহিলা) ম্যাচে এটি দেখা গেছে।
প্রথমে ব্যাট করে আর্জেন্টিনা নির্ধারিত ২০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৪২৭ রান করে, যেখানে একটি ছক্কাও দেখা যায়নি। এই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে চিলি দল অলআউট হয়ে যায় ৬৩ রানে। এই ইনিংসেও ছক্কা নেই। সব মিলিয়ে দুই ইনিংসেই কোনো ছক্কা মেরেনি। এই ম্যাচে আর্জেন্টিনা ৩৬৪ রানে জিতেছে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তৈরি এই ১০টি বড় রেকর্ড
প্রথম উইকেটে ৩৫০ রানের জুটি গড়ে আর্জেন্টিনা নারী দল।
আর্জেন্টিনার ইনিংসে মোট ৫৭টি বাউন্ডারি মারা হয়েছে, যেখানে একটি ছক্কাও মেরেনি।
অতিরিক্ত ৭৩ রান দেয় চিলি।
এক ইনিংসে ৬৪ নো বল দিয়ে ইতিহাস গড়লেন চিলির বোলাররা।
প্রায় 10 ওভার ফ্রি-হিট খেলার সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা দল।
20 ওভারের ম্যাচটি অতিরিক্ত বল সহ 30 ওভারের বেশি হয়ে যায়।
চিলির ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়েছেন মোট ৭ ব্যাটসম্যান।
চিলি মোট 63 রান করেছিল, যার মধ্যে 29 রান ছিল অতিরিক্ত।
চিলির ইনিংসে চার ব্যাটসম্যান রানআউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।
বড় পদক্ষেপ নিতে পারে আইসিসি?
এই বিষয়ে কোন পুনরাবৃত্তি করা উচিত নয়। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আগমনের পর ওয়ানডে ক্রিকেটের বিশ্বাসযোগ্যতা কলঙ্কিত হয়েছে। ভক্তরা ওয়ানডে থেকে টি-টোয়েন্টি দেখতে বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু কোথাও কোথাও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে বারে বারে প্রশ্ন উঠেছে। শুধু এই ম্যাচটি দেখুন। এক ওভারে 52 রান, 64 নো বলে যা এই ফরম্যাটের মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আর্জেন্টিনা এবং চিলির মধ্যে খেলা এই লজ্জাজনক ম্যাচটিও আইসিসির এখতিয়ারে আসে এবং এখন আইসিসি এই ম্যাচের নিরপেক্ষ তদন্ত করতে পারে। ৬৪ নো বলে খেলা নিয়ে সংশয়। এমতাবস্থায়, আইসিসি বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কী বড় পদক্ষেপ নেয় তা দেখার বিষয়।
বন্ধুরা অবশ্যই পোস্ট টি তে লাইক দিতে কিন্তু ভুলবেন না। মন্তব্য থাকলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।